Tuesday, April 24, 2012

খাতুনে জান্নাত ফাতেমা জননী (রাঃ) -জাতীয় কবি মরহুম কাজী নজরুল ইসলাম

খাতুনে-জান্নাত ফাতেমা জননী
বিশ্ব-দুলালী নবী-নন্দিনী।।
মদিনা-বাসিনী পাপ-তাপ-নাশিনী
উম্মত-তারিনী আনন্দিনী।।

সাহারার বুকে মা গো তুমি মেঘমায়া,
তপ্ত মরুর প্রাণে স্নেহ-তরুছায়া;
মুক্তি লভিল মা গো তব শুভ পরশে
বিশ্বের  যত নারী বন্দিনী।।

হাসান হোসেন তব উম্মত তরে, মা গো !
দিলে বলিদান;
বদলাতে তার রোজ হাশরের দিনে
চাহিবে মা মোর মতো পাপীদের ত্রাণ।

এলে পাষাণের বুক চিরে নির্ঝর-সম
করুণার ক্ষীর-ধারা আবে-জমজম;
ফেরদৌস হতে রহমত-বারি ঢালো
সাধ্বী মুসলিম গরবিনী।।


মুবাহালা ও পাক-পাঞ্জাতনঃ হযরত মুহাম্মদ(দঃ), ফাতেমা(রাঃ), হাসান(রাঃ), হোসেন(রাঃ) ও আলী(রাঃ)

 [হযরত মুফতী শফী সাহেব (রঃ)-এর তাফসীরে মাআরেফুল ক্বোরাণ এর বংগানুবাদ থেকে -সৌদী সরকার কর্তৃক প্রকাশিত সংস্করণ থেকে সংকলীত]

পবিত্র ক্বোরাণের ছুরা আল-ইমরাণের ৬১ নং আয়াতে আল্লাহপাক নবী করীম (দঃ) কে হুকুম করেনঃ

فَمَنْ حَاجَّكَ فِيهِ مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ فَقُلْ تَعَالَوْا نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ وَنِسَاءَنَا وَنِسَاءَكُمْ وَأَنْفُسَنَا وَأَنْفُسَكُمْ ثُمَّ نَبْتَهِلْ فَنَجْعَلْ لَعْنَتَ اللَّهِ عَلَى الْكَاذِبِين

বংগানুবাদঃ
অতঃপর আপনার নিকট সত্য সংবাদ এসে  যাওয়ার পর যদি এই কাহিনী সম্পর্কে আপনার সাথে কেউ বিবাদ করে, তাহলে বলেন, "এসো, আমরা ডেকে নেই আমাদের পুত্রদের এবং তোমাদের পুত্রদের এবং আমাদের স্ত্রীদের এবং তোমাদের স্ত্রীদের এবং আমাদের নিজেদের এবং তোমাদের নিজেদের, আর তারপর চল আমরে সবাই মিলে প্রার্থনা করি এবং তাদের  প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত করে যারা মিথ্যাবাদী।


শানেনযুলঃ
মহানবী(দঃ) নাজরানের খ্রীষ্টানদের কাছে একটি ফরমান প্রেরণ করেন। এতে ধারাবাহিকভাবে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়ঃ

(১) ইসলাম কবুল কর,
(২) অথবা জিজিয়া কর দাও,
(৩) অথবা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও।

খ্রীষ্টানরা পরস্পর পরামর্শ করে শোরাহবিল,  আব্দুল্লাহ ইবনে শোরাহবিল ও জিবার ইবনে ফয়েজকে হুজুর(দঃ) এর কাছে পাঠায়। তারা এসে ধর্মীয় বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা হযরত ঈসা (আঃ)-কে উপাস্য প্রতিপন্ন করার জন্য প্রবল বাদানুবাদের আশ্রয় গ্রহন করে। ইতিমধ্যে মুবাহালার উপরোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়।

মুবাহালার ঘটনাঃ
 মুবাহালার উপরোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হলে রসুলে খোদা (সাঃ) উপরোল্লিখিত নাজরানের খ্রীষ্টানদের প্রতিনিধি দলকে মুবাহালার আহ্বান জানান এবং নিজেও ফাতিমা, হযরত আলী এবং ইমাম  হাসান-হোসাইন কে সংগে নিয়ে মুবাহালার জন্য প্রস্তুত হয়ে আসেন। এ দেখে শোরাহবিল ভিত হয়ে যায় এবং সাথীদ্বয়কে বলতে থাকেঃ তোমরা জান যে ইনি আল্লাহর নবী। আল্লাহর নবীর সাথে মুবাহালা করলে আমাদের ধ্বংস অনিবার্য। তাই মুক্তির অন্য কোন পথ খোঁজ। সংগীদ্বয় বললঃ তোমার মতে মুক্তির উপায় কি? সে বললঃ আমার মতে নবীর শর্তানুযায়ী সন্ধী করাই উত্তম উপায়। অতঃপর এতেই খ্রীষ্টান প্রতিনিধিদল সম্মত হয় এবং মহানবী (সাঃ) তাদের ওপর জিযিয়া কর ধার্য করে মিমাংসায় উপনীত হন।-(ইবনে কাসীর, ১ম খন্ড)

 [উপরোক্ত অংশ হযরত মুফতী শফী সাহেব (রঃ)-এর তাফসীরে মাআরেফুল ক্বোরাণ এর বংগানুবাদ থেকে -সৌদী সরকার কর্তৃক প্রকাশিত সংস্করণ থেকে সংকলীত]



পাক-পাঞ্জাতন বা পবিত্র ৫ জনঃ

(১) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
(২) হযরত ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ (রাঃ)
(৩) হযরত আলী (রাঃ)
(৪) হযরত ইমাম হাসান (রাঃ)
(৫) হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ)

আখেরী পয়গম্বর হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) উপরোক্ত ৫ জন ব্যাতীত অন্য কাউকে - এমনকি তাঁর কোন স্ত্রী  বা হাসেমী বংশের কোন নিকটাত্মীয় বা নিকটতম কোন সাহাবী বা পালকপুত্র হযরত যায়েদ (রাঃ) বা যায়েদের পুত্র ওসামা (রাঃ) - কাউকেই মোবাহালায় সময় সাথে নেন নাই।  হযরত নবী করীম (সাঃ) তিনি সহ উপরোক্ত ৫ জনকেই তাঁর পরিবার ও নিকতম জন বলে সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত করেন।